কথিত আছে ধোপাখোলার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা বিশ্বজিত গাঙ্গুলী তার থ্রি নাট থ্রি রাইফেল দিয়ে আকাশ থেকে বিমান বন্দরে অবতরণরত যুদ্ধ বিমান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন। সে গুলিতে বিমান বা বিমানের কোন আরোহীর কোন ক্ষতি হয়নি। তবু ঐ সময়ের আরবপুর ইউনিয়নের পিস কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল সলেমান মুন্সীর বাড়ী ধোপাখোলা আর সেখান থেকে পাকিস্থানী বিমানে গুলি! আতে ঘা লাগে রাজাকারদের। তাদের চেনানো পথে হায়নারা আক্রমণ করে ধোপাখোলায়।
৩০ মার্চ ১৯৭১। হানাদার বাহিনী আরবপুর ইউনিয়নেসবচেয়ে নির্মম হত্যাকান্ড ঘটায়ধোপাখোলায়। শতাধিক লোককে লাইনে দাড় করিয়ে হত্যা করে ঘাতকরা। সে নির্মমহত্যাকান্ডে শহীদ হন ধোপাখেলার নজরুল ইসলাম, খলিলুর রহমান,ডাক্তার আব্দুসসাত্তার, আব্দুল আজিজ,আব্দুর রশিদ, সলেমান বিশ্বাস,জিন্নাত আলী, মফেজবিশ্বাস, শামসুর রহমান, আবু বাক্কার, রবিউল ইসলাম, খোরশেদ বিশ্বাস, মফেজসরদার, এশারত আলী, মহসিন আলী বিশ্বাস, রওশন আলী, মতিউল্লাহ বিশ্বাস, লুতফররহমান, ওয়াজেদ আলী, হাসেম আলী, জাকিয়া বেগম, আক্কাস আলী, আব্দুল পাটোয়ারী, হোসেন আহম্মদ, গৌর গাঙ্গুলী,মখলেসুর রহমান, তেঘরিয়ার মকসেদ আলী, মোশারেফআলী লিচু বিক্রেতা সহ আরো অনেকে। কাকতালীয়ভাবে ঐদিনেই কুমিল্লা ময়নামতিক্যান্টনমেন্টের আর্টিলারি পি এস এ( ৯৪১৯)ক্যাপ্টেন এম নুরুল ইসলাম ধোপাখোলায় বেড়াতে আসলে ঘাতকেরবুলেটে তিনিও শহীদ হন।
দীর্ঘদিন অনাদার আর অবহেলায় বিস্মৃত হতে থাকা স্মৃতি বিজড়িত স্থানে ২০১০ সালে নির্মিত হয় স্মৃতি স্তম্ভ। এক নদী রক্ত আর ইতিহাসের কালের স্বাক্ষী হয়ে আজো যশোর বেনাপোল সড়কের ধোপাখোলা নিমতলা হতে ক্যাপ্টেন নুরুল ইসলাম সড়ক ধরে ১ কি:মি: সামনে গেলেই যশোর বেনাপোল ট্রেন লাইনের ধার ঘেষে দাড়িয়েআছে ধোপাখোলা বধ্যভূমি নাম নিয়ে। যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতি। মহান মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইতিহাসকে জানার অন্যতম বিদ্যাপীঠ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস